No item in cart.
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাতের (তাকবীরে তাহরিমার) জন্য তাকবীর বলতেন, তখন কাঁধ বরাবর দু'হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকূ’ করার ইচ্ছা পোষণ করতেন। আর যখন রুকূ’ থেকে তাঁর মাথা উঠাতেন তখনও (ঐরুপ করতেন)। আর যখন দু’রাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) উঠতেন তখনও অনুরূপ করতেন।”
এটি উত্তম (হাসান) সনদে বর্ণিত হয়েছে।
মুসনাদে আহমাদ (৯১/১), ইমাম তিরমিয়ী (৩৪২৩) একে হাসান সহীহ বলেছেন, ইবনু খুযাইমাহ (৫৮৪), ইবনু হিব্বান (উমদাতুল কারী ২৭৭/৫) উভয়ে তাদের সহীহাইনে উল্লেখ করেছেন। ইমাম আহমাদ ও অন্যরা এটিকে সহীহ (নির্ভরযোগ্য) বলে মত দিয়েছেন। এর বর্ণনাকারী আবদুর রহমান বিন আবু যিনাদ বিশ্বস্ত (সিকাহ) ও হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে উত্তম ব্যক্তি। ইমাম যাহাবী বলেন, তাঁর স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বের বর্ণনাগুলো হাসান। (দেখুন সিয়ারে আলামুন নুবালা ৮ম খণ্ড, ১৬৮, ৭০ পৃষ্ঠা)। ইবনুল মাদীনী একে শক্তিশালী (কাউয়ি) বলে মত পোষণ করেছেন। এ বর্ণনাটি আবদুর রহমান বিন আবু যিনাদ এর স্মৃতিশক্তি খর্ব হওয়ার পূর্বেকার। (নূরুল আইনাইন: ৮৩, ৮৪ পৃষ্ঠা)
তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে (সালাতে) দু'হাত উত্তোলন করতে দেখেছি। যখন তিনি (তাকবীরে তাহরিমার জন্য) তাকবীর বলতেন, যখন রুকূ’ করতেন ও যখন রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন। কিন্তু তিনি দু' সাজদাহর মাঝে এমনটি করতেন না।
আলী বিন আবদুল্লাহ- যিনি তৎকালীন সময়ে বড় বিদ্বান ছিলেন, তিনি বলেন, যুহরী সালেম হতে, তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন, রাফ্উল ইয়াদায়ন প্রতিটি মুসলিমদের জন্য অপরিহার্য বিষয়।
হাদীসটি মারফু'। এই বর্ণনাটি অক্ষরে অক্ষরে নির্ভরযোগ্য।
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দশজন সাহাবীসহ আবু হামিদের নিকট ছিলাম, আবু কাতাদা তাঁদেরই একজন, তিনি বলেন, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূলের সালাত বিষয়ে বেশি জানি। তারা বললেন, কী রকম? আল্লাহর কসম! তুমিতো আমাদের চেয়ে বেশি সাহচর্য লাভ করনি। আর অনুসরণে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামীও ছিলে না। তিনি বললেন, কিন্তু আমি তাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম। তারা বলল, তার বর্ণনা দাও। তিনি বললেন, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তাঁর দু'হাত উঠাতেন, যখন রুকূ’তে যেতেন ও রুকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন, আর যখন তিনি দুরাকাআত শেষে (তৃতীয় রাকাআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ করতেন।”
হাদীসটি সহীহ ও মারফু'।
ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু হিব্বান, ইবনুল জারুদ, তিরমিয়ী ও ইবনু তাইমিয়্যা একে সহীহ বলেছেন। আবদুল হামীদ বিন জাফর হচ্ছেন। সহীহ মুসলিমের রাবী।
তিনি বলেন, আবু হুমাইদ, আবু উসাইদ ও মুহাম্মদ বিন মাসলমাহ (রাবীত্রয়) একত্রিত হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের বর্ণনা দিলেন। অতঃপর আবু হুমাইদ বললেন, আমি তোমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে বেশি জানি। তিনি (সালাতের জন্য) দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলতেন, তখন তাঁর দু' হাত উঠাতেন, এরপর যখন তিনি রুকূ’’র জন্য আল্লাহু আকবার বলতেন তখন দু'হাত উঠাতেন, এরপর তিনি (যখন) রুকূ’ করতেন, তখন তার দু'হাত তাঁর দু'হাঁটুর উপর স্থাপন করতেন”
এ হাদীসটি মারফু' ও হাসান।
ইবনু খুযাইমা ৫৮৯, ৬০৮, ৬৩৭, ৬৪০, ৬৮৯, ইবনু হিব্বান। ৪৯৪, তিরমিয়ী ২৬০ সকলেই একে সহীহ বলেছেন। মুহাম্মদ বিন ইয়াহইয়া আয যাহলী বলেন, যে ব্যক্তি এ হাদীস জানার পর রুকূ’র পূর্বে ও পরে রাফ্উল ইয়াদায়ন করবে না, তার সালাত অপূর্ণাঙ্গ।
আল আব্বাস আস সাঈদী থেকে আমাদেরকে খবর দিচ্ছেন, তিনি বলেন, আমি আবু কাতাদা, আবু উসাইদ ও আবু হুমাইদ এর সঙ্গে বাজারে অবস্থান করছিলাম, এমতাবস্থায় তারা সকলেই বলল, “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে বেশি জানি। তখন তাদের একজন (আবু উসাইদকে) বললেন, তুমি সালাত আদায় কর। তখন তিনি তাকবীর দিয়ে কিরাআত পাঠ করলেন, এরপর পুনরায় তাকবীর দিয়ে দু'হাত উঠালেন, এরপর তারা (তিনজন) বললেন, তুমি সঠিকভাবেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত আদায় করেছ।”
এ বর্ণনাটি হাসান।
ইবনু ইসহাক মুদাল্লিস, কিন্তু সহীহ ইবনু খুযাইমাতে তার শ্ৰবণের ব্যাপারটিকে বলিষ্ঠ করা হয়েছে।
নোট: এটি যে কপি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে, সেই জুযউ রফইল ইয়াদায়নের যহিরিয়্যা নুসখাটি (কপি) তে আবু ইসহাককে সহীহ ইবনু খুযাইমার বরাতে বিশ্বস্ত হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জুযউ রাফ্উল ইয়াদায়নের ভারতীয় কপিতে আবু ইসহাক সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি বিশুদ্ধ নন।