No item in cart.
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হালাল বস্তুকে হারাম করে নেয়া এবং ধনসম্পদ ধ্বংস করা দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি (যুহ্দ) নয়, বরং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি হলোঃ আল্লাহর নিকট যা আছে তার চেয়ে তোমার নিকট যা আছে তার উপর অধিক নির্ভরশীল না হওয়া এবং তুমি কোন বিপদে পতিত হলে তার বিনিময়ে সওয়াবের আশার তুলনায় বিপদে পতিত না হওয়াটা তোমার নিকট অধিকতর কাঙ্ক্ষিত না হওয়া। হিশাম (রাঃ) বলেন, আবূ ইদরীস আল-খাওলানী (রাঃ) বলেছেন, হাদীস ভান্ডারে এ হাদীসটি যেন স্বর্ণ খনির খাঁটি সোনা। [৩৪৩২]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ وَاقِدٍ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مَيْسَرَةَ بْنِ حَلْبَسٍ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَيْسَ الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا بِتَحْرِيمِ الْحَلاَلِ وَلاَ فِي إِضَاعَةِ الْمَالِ وَلَكِنِ الزَّهَادَةُ فِي الدُّنْيَا أَنْ لاَ تَكُونَ بِمَا فِي يَدَيْكَ أَوْثَقَ مِنْكَ بِمَا فِي يَدِ اللَّهِ وَأَنْ تَكُونَ فِي ثَوَابِ الْمُصِيبَةِ إِذَا أُصِبْتَ بِهَا أَرْغَبَ مِنْكَ فِيهَا لَوْ أَنَّهَا أُبْقِيَتْ لَكَ " . قَالَ هِشَامٌ كَانَ أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ يَقُولُ مِثْلُ هَذَا الْحَدِيثِ فِي الأَحَادِيثِ كَمِثْلِ الإِبْرِيزِ فِي الذَّهَبِ .
[৩৪৩২] তিরমিযী ২৩৪০, মিশকাত ৫৩০১। তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী আমর বিন ওয়াকীদ আল-কুরাশী সম্পর্কে আবু বাকর আল-বুরকানী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু মুসহির আল-গাসসানী বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলেন না। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত। ইমাম যাহাবী তাকে বর্জন করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৪৬৮, ২২/২৮৬ নং পৃষ্ঠা)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা এমন লোক দেখতে পাবে যাকে দুনিয়াতে যুহদ দান করা হয়েছে এবং স্বল্পভাষী করা হয়েছে, তখন তোমরা তার নৈকট্য ও সাহচর্য অবলম্বন করবে। কারণ তাকে প্রজ্ঞা দান করা হয়েছে। [৩৪৩৩]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، عَنْ أَبِي خَلاَّدٍ، - وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ - قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ قَدْ أُعْطِيَ زُهْدًا فِي الدُّنْيَا وَقِلَّةَ مَنْطِقٍ فَاقْتَرِبُوا مِنْهُ فَإِنَّهُ يُلَقَّى الْحِكْمَةَ " .
[৩৪৩৩] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ১৯২৩, দঈফ আল-জামি’ ৫০৮।
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যা আমি করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং লোকেরাও আমাকে ভালোবাসবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি অবলম্বন করো। তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। মানুসের নিকট যা আছে, তুমি তার প্রতি অনাসক্ত হয়ে যাও, তাহলে তারাও তোমাকে ভালোবাসবে। [৩৪৩৪]
তাহকীক আলবানীঃ দুর্বল।
حَدَّثَنَا أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ أَبِي السَّفَرِ، حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَمْرٍو الْقُرَشِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا أَنَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِيَ اللَّهُ وَأَحَبَّنِيَ النَّاسُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّوكَ " .
[৩৪৩৪] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ১৯২৩, দঈফ আল-জামি’ ৫০৮।
আমি আবূ হাশিম বিন উতবাহ (রাঃ) এর কাছে গেলাম। তিনি বর্শার আঘাতে আহত হয়ে অসুস্থ ছিলেন। মুআবিয়া (রাঃ) ও তাকে দেখতে এলেন। আবূ হাশেম (রাঃ) কেঁদে দিলে তিনি বলেন, হে মামা! কিসে আপনাকে কাঁদাচ্ছে। আঘাতের যন্ত্রনা, নাকি পার্থিব কিছু? পার্থিব কিছু হলে তার উৎকৃষ্ট অংশ তো অতিবাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, এর কোনটিই নয়। তবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন। হায়! আমি যদি তা অনুসরন করতাম। তিনি বলেছিলেন, “হয়তো তুমি পর্যাপ্ত সম্পদের অধিকারী হবে যা তুমি জনগনের মধ্যে বিতরন করবে। তখন তোমার জন্য একটি খাদেম এবং আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য একটি সওআরীই যথেষ্ঠ”। আমি সেই প্রাচুর্য লাভ করেছি কিন্তু তা (বিতরন না করে) পুঞ্জীভূত করে রেখেছি। [৩৪৩৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ سَهْمٍ، - رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ - قَالَ نَزَلْتُ عَلَى أَبِي هَاشِمِ بْنِ عُتْبَةَ وَهُوَ طَعِينٌ فَأَتَاهُ مُعَاوِيَةُ يَعُودُهُ فَبَكَى أَبُو هَاشِمٍ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ مَا يُبْكِيكَ أَىْ خَالِ أَوَجَعٌ يُشْئِزُكَ أَمْ عَلَى الدُّنْيَا فَقَدْ ذَهَبَ صَفْوُهَا قَالَ عَلَى كُلٍّ لاَ وَلَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَهِدَ إِلَىَّ عَهْدًا وَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ تَبِعْتُهُ قَالَ " إِنَّكَ لَعَلَّكَ تُدْرِكُ أَمْوَالاً تُقْسَمُ بَيْنَ أَقْوَامٍ وَإِنَّمَا يَكْفِيكَ مِنْ ذَلِكَ خَادِمٌ وَمَرْكَبٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ " . فَأَدْرَكْتُ فَجَمَعْتُ .
[৩৪৩৫] তিরমিযী ২৩২৭। আত তা’লীকুর রাগীব ৪/১২৩।
সালমান (রাঃ) অসুস্থ হয়ে পড়লে সা’দ (রাঃ) তাকে দেখতে যান। তিনি তাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞেস করেন, হে ভাই! আপনি কাঁদছেন কেন? আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহচর্য লাভ করেননি? আপনি কি এই এই (ভালো কাজ) করেননি। সালমান (রাঃ) বলেন, আমি এই দু’টির কোনটির জন্যই কাঁদছি না। আমি দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার আক্ষেপে বা আখেরাতের পরিণতির আশংকায় কাঁদছি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু মনে হয় আমি তাতে সীমালংঘন করেছি। সা’দ (রাঃ) বলেন, তিনি আপনার থেকে কী প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন? সালমান (রাঃ) বলেন, তিনি এই প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন যে, “তোমাদের যে কোন ব্যক্তির একজন পর্যটকের সমপরিমাণ পাথেয় যথেষ্ট”। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমি সীমালংঘন করে ফেলেছি। হে ভাই সা’দ! যখন তুমি বিচার মীমাংসা করবে, ভাগ-বাঁটোয়ারা করবে এবং কোন কাজের উদ্যোগ গ্রহন করবে তখন আল্লাহকে ভয় করবে। সাবিত (রাঃ) বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, (মৃত্যুর সময়) সালমান (রাঃ) তার ভরণপোষণের জন্য সঞ্চিত মাত্র বিশাধিক দিরহাম রেখে যান। [৩৪৩৬]
তাহকীক আলবানীঃ সালমান ও সাবিত এর কাওলটি সহীহ; সালমান (রাঃ) এর কাওল সহীহাহ ৪/২৯৪, সাবিত এর কওল আত তা’লীকুর রাগীব ৪/৯৯।
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَبِي الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ اشْتَكَى سَلْمَانُ فَعَادَهُ سَعْدٌ فَرَآهُ يَبْكِي فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ مَا يُبْكِيكَ يَا أَخِي أَلَيْسَ قَدْ صَحِبْتَ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَلَيْسَ أَلَيْسَ قَالَ سَلْمَانُ مَا أَبْكِي وَاحِدَةً مِنَ اثْنَتَيْنِ مَا أَبْكِي صَبًّا لِلدُّنْيَا وَلاَ كَرَاهِيَةً لِلآخِرَةِ وَلَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَهِدَ إِلَىَّ عَهْدًا فَمَا أُرَانِي إِلاَّ قَدْ تَعَدَّيْتُ . قَالَ وَمَا عَهِدَ إِلَيْكَ قَالَ عَهِدَ إِلَىَّ أَنَّهُ يَكْفِي أَحَدَكُمْ مِثْلُ زَادِ الرَّاكِبِ وَلاَ أُرَانِي إِلاَّ قَدْ تَعَدَّيْتُ وَأَمَّا أَنْتَ يَا سَعْدُ فَاتَّقِ اللَّهَ عِنْدَ حُكْمِكَ إِذَا حَكَمْتَ وَعِنْدَ قَسْمِكَ إِذَا قَسَمْتَ وَعِنْدَ هَمِّكَ إِذَا هَمَمْتَ . قَالَ ثَابِتٌ فَبَلَغَنِي أَنَّهُ مَا تَرَكَ إِلاَّ بِضْعَةً وَعِشْرِينَ دِرْهَمًا مِنْ نَفَقَةٍ كَانَتْ عِنْدَهُ .
[৩৪৩৬] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
উক্ত হাদীসের রাবী জা’ফার বিন সুলায়মান সম্পর্কে আবূ আহমাদ আল-হাকিম বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আবূ বাকর আল-বাযযার বলেন, তার দোষত্রুটি সম্পর্কে কাউকে কিছু বলতে শুনিনি। আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৪৩, ৫/৪৩ নং পৃষ্ঠা)