No item in cart.
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), মুআয বিন জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠাবার প্রাক্কালে বলেন, নিশ্চয়ই তুমি এমন একটি সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছো যারা আহলে কিতাব। তুমি সর্বপ্রথম তাদেরকে "আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহ্র রসূল" এ কথার সাক্ষ্য দেয়ার আহ্বান জানাবে। তারা তা মেনে নিলে তুমি তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ্ তাদের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সলাত ফরয করেছেন। তারা যদি এ কথাও মেনে নেয়, তবে তাদের আরও জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ্ তাদের সম্পদের উপর যাকাত ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট থেকে আদায় করা হবে এবং তাদের গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তারা যদিও এটিও মেনে নেয় তবে তাদের উত্তম সম্পদ (গ্রহণ) থেকে নিজেদের বিরত রাখবে। তুমি মযলুমের বদদোয়াকে ভয় করো। কেননা মযলুমের আহাজারি ও আল্লাহ্র মাঝে কোন পর্দা (প্রতিবন্ধক) নেই। [১৭৮৩]
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعُ بْنُ الْجَرَّاحِ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ إِسْحَقَ الْمَكِّيُّ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَيْفِيٍّ عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا أَهْلَ كِتَابٍ فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِي أَمْوَالِهِمْ تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ فِي فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ
[১৭৮৩] সহীহুল বুখারী ১৩৯৫, ১৪৯৬,২৪৪৮, ১৪৪৮, ৪৩৪৭, ৭৩৭১, ৭৩৭২, মুসলিম ১৯, তিরমিযী ৬২৫, নাসায়ী ২৪৩৫, আবূ দাউদ ১৫৮৪, আহমাদ ২০৭২, দারেমী ১৬১৪, ইরওয়া ৭৮২, সহীহ আবী দাউদ ১৪১২, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে না, তার মালকে কিয়ামাতের দিন বিষধর সাপে পরিণত করা হবে, এমনকি তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হবে। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমর্থনে আল্লাহ্র কিতাবের নিম্নোক্ত আয়াত আমাদের তিলাওয়াত করে শুনান (অনুবাদ): "আর আল্লাহ্ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদের দিয়েছেন, এতে যারা কৃপণতা করে, তাদের জন্য তা মঙ্গলজনক একথা যেন তারা মনে না করে...” (৩: ১৮০)। [১৭৮৪]
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْعَدَنِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَعْيَنَ وَجَامِعِ بْنِ أَبِي رَاشِدٍ سَمِعَا شَقِيقَ بْنَ سَلَمَةَ يُخْبِرُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا مِنْ أَحَدٍ لَا يُؤَدِّي زَكَاةَ مَالِهِ إِلَّا مُثِّلَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ حَتَّى يُطَوِّقَ عُنُقَهُ ثُمَّ قَرَأَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى {وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمْ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ} الْآيَةَ
[১৭৮৪] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৭/৫। সহীহ তারগীব ১/৭৫৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন উট, ছাগল ও গরুর মালিক যদি এর যাকাত আদায় না করে, তবে এগুলো কিয়ামাতের দিন বিরাটকায় ও মোটাতাজা হয়ে উপস্থিত হবে এবং মালিককে এদের শিং ও ক্ষুর দিয়ে আঘাত করতে থাকবে। শেষটির পালা শেষ হলে আবার প্রথমটি থেকে শুরু হবে এবং এভাবেই চলতে থাকবে, যে পর্যন্ত না বিচারকার্য শেষ হয়। [১৭৮৫]
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ الْمَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ وَلَا غَنَمٍ وَلَا بَقَرٍ لَا يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلَّا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْظَمَ مَا كَانَتْ وَأَسْمَنَهُ تَنْطَحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا كُلَّمَا نَفِدَتْ أُخْرَاهَا عَادَتْ عَلَيْهِ أُولَاهَا حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ
[১৭৮৫] সহীহুল বুখারী ১৪৬০,মুসলিম ৯৯০, তিরমিযী ৬১৭, নাসায়ী ২৪৪০, ২৪৫৬, আহমাদ ২০৮৪৪, ২০৮৯০, ২০৯৮০, তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে উটের যাকাত দেয়া হয়নি, তা কিয়ামাতের দিন তার মালিককে তার ক্ষুর দিয়ে মাড়াতে থাকবে। তদ্রূপ গরু ও ছাগল এসে এদের ক্ষুর ও শিং দিয়ে এদের মালিককে আঘাত করতে থাকবে। তার সঞ্চিত সম্পদও বিষধর সাপে পরিণত হয়ে তার মালিকের সামনে হাজির হবে। মালিক দু’বার তা দেখে পালাবে, কিন্তু সে আবার মালিকের সামনে এসে দাঁড়াবে। তখন মালিক পালাতে চেষ্টা করবে এবং বলবে, তোমার সাথে আমার কি সম্পর্ক? সে বলবে, আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ, আমি তোমার রক্ষিত ধন। মালিক তার হাত দিয়ে সাপ থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে সে তার হাতটি গিলে ফেলবে। [১৭৮৬]
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْعُثْمَانِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تَأْتِي الْإِبِلُ الَّتِي لَمْ تُعْطِ الْحَقَّ مِنْهَا تَطَأُ صَاحِبَهَا بِأَخْفَافِهَا وَتَأْتِي الْبَقَرُ وَالْغَنَمُ تَطَأُ صَاحِبَهَا بِأَظْلَافِهَا وَتَنْطَحُهُ بِقُرُونِهَا وَيَأْتِي الْكَنْزُ شُجَاعًا أَقْرَعَ فَيَلْقَى صَاحِبَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَفِرُّ مِنْهُ صَاحِبُهُ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يَسْتَقْبِلُهُ فَيَفِرُّ فَيَقُولُ مَا لِي وَلَكَ فَيَقُولُ أَنَا كَنْزُكَ أَنَا كَنْزُكَ فَيَتَقِيهِ بِيَدِهِ فَيَلْقَمُهَا
[১৭৮৬] সহীহুল বুখারী ১৪০২, ১৪০৩, ৪৫৬৫, ৪৬৫৯, ৬৯৫৮, মুসলিম ৯৮৭, নাসায়ী ২৪৪৮, ২৪৮২, আবূ দাউদ ১৬৫৮, আহমাদ ৭৫০৯, ৭৬৬৩, ৭৬৯৮, ২৭৪০১, ৮৪৪৭, ২৭৪৩৩, ৮৭৫৪, ৯৯৭১, ১০৪৭৪, মুয়াত্তা মালেক ৫৯৬, সহীহ আবী দাউদ ১৪৬২, বুখারী, তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম বুখারী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা) ২. আলা বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ তার খারাপি সম্পর্কে কারো থেকে কিছু শুনিনি। ইমাম তিরমিযি বলেন, হাদিস বিশারদদের নিকট তিনি সিকাহ। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনু আদী বলেন, আমি কোন সমস্যা দেখি না। ইবনু হিব্বান তাকে সিকাহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৫৭৭, ২২/৫২০ নং পৃষ্ঠা)
আমি আবদুল্লাহ্ বিন উমার (রাঃ) এর সাথে বের হলাম। এক বেদুঈন এসে তাঁকে আল্লাহ্র বাণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলোঃ “যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না...”(সূরা তওবাঃ ৩৪)।
ইবনু উমার (রাঃ) তাকে বলেন, যে ব্যক্তি সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, অথচ এর যাকাত আদায় করে না, তার জন্য ধ্বংস অনিবার্য। এ অবস্থা ছিল যাকাতের বিধান নাযিল হওয়ার আগের। পরবর্তীতে যাকাতের বিধান নাযিল হলে যাকাতকেই আল্লাহ্ মালের পবিত্রতাকারী সাব্যস্ত করেন। অতঃপর ইবনু উমার (রাঃ) লোকটির দিকে তাকিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমার পরোয়া নেই যে, উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনাও যদি আমার হাতে আসে, তবে আমি তার পরিমাণ নিরূপণ করে এর যাকাত পরিশোধ করবো এবং মহান আল্লাহ্র হুকুম পালনে তা ব্যয় করবো। [১৭৮৭]
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ الْمِصْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ وَهْبٍ عَنْ ابْنِ لَهِيعَةَ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ أَسْلَمَ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ خَرَجْتُ مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَلَحِقَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ لَهُ قَوْلُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ {وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ}.
قَالَ لَهُ ابْنُ عُمَرَ مَنْ كَنَزَهَا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهَا فَوَيْلٌ لَهُ إِنَّمَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللهُ طَهُورًا لِلْأَمْوَالِ ثُمَّ الْتَفَتَ فَقَالَ مَا أُبَالِي لَوْ كَانَ لِي أُحُدٌ ذَهَبًا أَعْلَمُ عَدَدَهُ وَأُزَكِّيهِ وَأَعْمَلُ فِيهِ بِطَاعَةِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ.
[১৭৮৭] সহীহুল বুখারী ১৪০৪, সহীহাহ ২/৯৬-৯৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইবনু লাহীআহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে যে ব্যাক্তি অনেক পূর্বে হাদিস গ্রহন করেছেন তার হাদিস সহিহ। আমর বিন আল-ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাফস উমার বিন শাহীন বলেন, তিনি সিকাহ। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি সিকাহ নন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা)